আজ, , ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :
«» স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, আটক ৩ «» ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজতে সহযোগিতা করুন: প্রধানমন্ত্রী «» ৭টি চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার, আটক ৭ «» যুক্তরাজ্যে সিলেটি বংশোদ্ভূত আপসানা বেগমসহ ৭ ব্রিটিশ এমপি বহিষ্কার! «» স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর «» জগন্নাথপুরে ছাত্রলীগ থেকে যারা পদত্যাগ করলেন «» শান্তিগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল রাজপথ, ঘন্টাব্যাপী সড়ক যোগাযোগ বন্ধ «» ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করলেন পরিষদের ১১ মেম্বার «» সুনামগঞ্জে কোটা সংস্কারের সমর্থনে বিক্ষোভ, গ্রেফতার ১ «» সিলেটে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত





ছাতকের হায়দরপুরের বিশাল বাগানের কুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে

আব্দুল আলিম, ছাতক থেকে :: ছাতকে ভাতগাঁও ইউনিয়নের একটি বিশাল এলাকা জুড়ে কুল বাগানের চারদিকে তাকালে শুধু কুল আর কুল (বরই)।চার থেকে ছয় ফুট উচ্চতার একেকটি গাছ কুলের ভারে নুইয়ে পড়েছে। বাগানটি দেখে মনে হয় এ যেন এক লাল সবুজের সমাহার। বাগানে চাষ করা হয়েছে কাশ্মিরী কুল,বাউকুল,আপেল কুল,ও বল সুন্দরী জাতের কুল।

বর্তমানে গাছে-গাছে কাঁচা-পাকা ঝুলন্ত কুল (বরই) গুলো দেখতে লাল ও অনেক গুলো আপেলের মতো ।স্বাদে ও বেশ মিষ্টি। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ভাতগাঁও
ইউনিয়নের হায়দরপুর গ্রামে কুল বাগানটি গড়ে তুলেছেন হায়দরপুর গ্রামের বাসিন্দা,বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া ও ইংল্যান্ড প্রবাসী রফিক হায়দার।
চলতি মৌসুমে তাদের বাগানে কুল বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরে প্রথম ওই বাগানের কুল বিক্রি করে ২০ লক্ষ টাকা আয় করেছেন বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া। চলতি মৌসুমে ৩০ লক্ষ টাকা আয় করার টার্গেট রয়েছে তার।ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি করা হয়েছে। বাগানে প্রতি কেজি কুল ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করা হয়।এখনো দেখা গেছে বাগানের ১০ শতাংশ কুল পাড়া শেষ হয়েছে আর ৯০ শতাংশ কুল এখনো গাছে ঝুলছে। ২ বছর ধরে এলাকার চাহিদা পুরণ করে এ বাগানের কুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ও বিক্রি হচ্ছে।

ইংল্যান্ড প্রবাসী রফিক হায়দার জানান,তাদের বড়ভাই গিয়াস মিয়াও ইংল্যান্ড প্রবাসী ছিলেন এবং ভাতগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন দীর্ঘদিন। তিনি কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে বাগানের জমিগুলো ক্রয় করেছিলেন।
গিয়াস মিয়া মারা যাবার পর মরহুম আলহাজ্ব গিয়াস মিয়া ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার অসহায় লোকজনদের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিবাহে সহযোগিতা,শিক্ষা বৃত্তি প্রদানসহ সমাজের উন্নয়নে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয় ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। ওই জমিতে গড়ে ওঠা আলহাজ্ব গিয়াস মিয়া ফ্রুট এন্ড ফিস গার্ডেন গিয়াস মিয়া ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান। ২১ একর জমিতে রয়েছে তাদের ওই কুল বাগান। বাগানের কুল বিদেশে রপ্তানির জন্যও তাদের উদ্যোগ রয়েছে।

গিয়াস মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া বলেন, কুল বাগানটি দেখতে প্রায়ই দূর দুরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় করেন। অনেকে পরামর্শ নিতে চান। তাদের বাগানে রয়েছে স্থায়ী ৮ জন কেয়ার টেকার। মৌসুমে ২০০ জন লোক বাগানে কাজ করেন। বাগানের গাছের পরিচর্যা সহ বছরে ব্যয় হয় প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। বাগানের মধ্যে রয়েছে একটি বিশাল পুকুর। পুকুরের পানি বাগানে ব্যবহার ছাড়াও পুকুরে মাছের চাষ করা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু জমিতে লাল শাক, মুলা, ধনিয়া, খিরা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচামরিচ, বরবটি,শিম, টমেটো,বেগুন চাষাবাদও করা হয়।
কুল চাষে সফল হয়েছেন বলে সিলেট মিররকে তিনি জানান তাদের বাগানের মতো এত বড়ো কুল বাগান সিলেট বিভাগের আর কোথাও নেই। তবে এক একর জমিতে ছোট আকারেও কুল চাষ করে লাভবান হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ওই বাগানের পাশে তাদের আরো ১০ একর জমি রয়েছে। এ জমিতেও একটি ফলের বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে। সেইফ ফুড সিলেটের চেয়ারম্যান ও প্যারাগন প্রোপার্টিস লিমিটেডের ফাউন্ডার এনামুল হক চৌধুরী গত বুধবার বাগান ও পাশের জমি পরিদর্শন করেন। এখানে ড্রাগনের ভালো ফলন হবে বলে তিনি জানান। কাজেই পাশের জমিতে ড্রাগন চাষ করতে আগ্রহী তারা।

ছাতক উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক হোসেন খান বলেন, বানিজ্যিকভাবে কুল (বরই) চাষে তাদের লাভ ও উৎপাদন দেখে অন্যান্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।এখানকার আবহাওয়া ভালো থাকায় ও সঠিক পরির্চযার কারণে কুলের ভালো ফলন হয়েছে। প্রত্যেকটি গাছ কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে। কুল চাষে ঝুঁকি ও খরচ কম এবং লাভ বেশি। হায়দরপুর গ্রামের বৃহৎ এ কুল বাগানের জন্য আমরা সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি।আগামীতেও উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।##

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ