ডেস্ক রিপোর্ট :: তামাক সেবন না করেও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে দেশে বছরে প্রায় ৪ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে এক আলোচনা সভায় জানানো হয়েছে। আলোচকরা বলেন, তামাকের কারণে দেশে বছরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয়। সোমবার রাজধানীর বিএমএ ভবনে এই আলোচনা সভায় পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরো শক্তিশালী করার তাগিদ দেওয়া হয়। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডরপের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান। মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। এদের পাশাপাশি পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। তামাকের ব্যবহারে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ।
প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সাথেই তামাক জড়িত। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, তামাক ব্যবহারকারীদের তামাকজনিত রোগ, যেমন- ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশের বেশি। এছাড়া তামাকজনিত কারণে অন্য ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশের বেশি।সভায় পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরো শক্তিশালী করার তাগিদ দেওয়া হয় টোব্যাকো অ্যাটলাসের ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, তামাক ব্যবহারের কারণে দেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের তথ্যে বছরে মোট মৃত্যুর ১৯ শতাংশ তামাকের কারণে হয়ে থাকে।
সভায় তামাকের কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষযয়ে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ব্যায়ের পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। অথচ একই সময়ে (২০১৭-১৮ অর্থ বছর) তামাকখাত থেকে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ অর্জিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ মাত্র ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। নিট ব্যয় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. এহতেশামুল হক বলেন, বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।