ডেস্ক রিপোর্ট :: বিদেশিদের জন্য ইতালির কঠোর নাগরিকত্ব আইন সহজ করার বিষয়ে গণভোটের লক্ষ্যে যথেষ্ট পরিমাণ সই সংগ্রহ করেছে অভিবাসী সমর্থক গোষ্ঠী এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। মঙ্গলবার দেশটির সরকারি এক নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নাগরিকত্ব অর্জনে ইতালিতে বসবাসের সময়সীমা ১০ বছর থেকে কমিয়ে পাঁচ বছর এবং তাদের সন্তানদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আয়োজকেরা। এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে দাতব্য সংস্থা অক্সফাম ইতালিয়া ও অ্যাকশন এইড, প্লাস ইউরোপা পার্টি ও ইতালিয়ান সোশ্যালিস্ট পার্টি। দেশটিতে গণভোটের মাধ্যমে নাগরিকত্ব আইন পাস হলে অন্তত ২৫ লাখ বিদেশির ইতালির নাগরিকত্ব অর্জনের পথ সুগম হবে।
বিচার মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি অনলাইন রেজিস্টারে দেখা গেছে, পার্লামেন্টকে এড়িয়ে গিয়ে গণভোটকে উসকে দিতে আয়োজকরা নিজেদের দাবির পক্ষে পাঁচ লাখ সই সংগ্রহ করেছেন। ১৯৯২ সালে করা ইতালির নাগরিকত্ব আইনটি সংশোধন করার প্রচেষ্টা বারবার রাজনৈতিক জটিলতার কারণে আটকে ছিল। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই বাধা দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণভোটের অনুরোধটি এখন ইতালির সুপ্রিম কোর্ট এবং সাংবিধানিক আদালত পর্যালোচনা করে দেখবে। এই বাধাগুলো অতিক্রম করা গেলে ২০২৫ সালে দেশজুড়ে গণভোট হতে পারে। গণভোটের মাধ্যমে নাগরিকত্ব আইনটি পাস হলে অন্তত ২৫ লাখ বিদেশির ইতালির নাগরিকত্ব অর্জনের পথ সুগম হবে। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর বিষয়ে সবসময় বাধা দিয়ে এসেছে দেশটির ক্ষমতাসীন ডানপন্থি ব্রাদার্স অব ইতালি এবং লীগ পার্টি। তবে জোট সরকারের আরেক অংশীদার ফোরজা ইতালিয়া অপ্রত্যাশিতভাবে এই গ্রীষ্মে ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা পরিবর্তনের পক্ষে।
প্যারিস অলিম্পিকে ইতালির বহুজাতিক ক্রীড়াবিদদের সাফল্য পুরোনা এই বিতর্ককে আবারও প্রাণ দিয়েছে। কারণ, নাগরিকত্ব আইনের কারণে বিদেশিদের শিশুদের পক্ষেও ইটালীয় পাসপোর্ট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। ইউরোপীয় কমিশন বলছে, ইউরোপের মধ্যে ইতালির নাগরিকত্ব আইন সবচেয়ে কঠোর। অথচ ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলো মাত্র পাঁচ বছর বসবাস করা বিদেশিকে নাগরিকত্ব দেয়।
ইতালিতে বিদেশিদের পাসপোর্ট পেতে অন্তত ১০ বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতেু হয়। ইউরোপীয় কমিশন আরো জানিয়েছে, দেশটির আমলাতন্ত্রের কারণে একজন বিদেশি নাগরিকত্ব আবেদনের পরও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হয় দুই থেকে তিন বছর। ইতালির জন্মহার তীব্রভাবে কমে যাওয়ার পর অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে দেশটির রক্তশূন্য অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য আরও বেশি বিদেশিকে আকৃষ্ট করতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি জানিয়েছেন, অভিবাসন জনসংখ্যাগত সংকটের সমাধান নয়।