আজ, , ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :





বিশ্বনাথে কিশোর সাইমের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে গত ২৭ নভেম্বর পৌরসভার জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামে চাচার বসতঘর থেকে কিশোর সাইমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা ও পৌরসভার জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামের নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রত্না বেগম। রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় গত ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) রাতে দায়ের করা মামলা নং ১২ (তাং ২৯.১১.২৪ইং)। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- পৌরসভার জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত তৈমুছ আলীর পুত্র তাহির মিয়া (৩৭), তাহির মিয়ার বোন নিলুফা বেগম (৩৪), তাহিরের স্ত্রী রুবিনা বেগম (৩০)। এছাড়া মামলায় আরোও ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনার আসল রহস্যৎ উদঘাটনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে মামলার এজহার নামীয় ওই ৩ জনকে আটক করে। এরপর তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই আব্দুল হান্নান কিশোর সাইমের মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাঠন, অজ্ঞাতনামা পলাতক অভিযুক্ত সনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, সাইমের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারের জন্য গ্রেপ্তারকৃত ওই ৩ জনকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন। এঘটনায় মামলা দায়ের, ৩ জনকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড চাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্বনাথ থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান।

 

থানায় দায়ের করা লিখিত এজাহারে নিহতের মা ও পৌরসভার জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামের নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রত্না বেগম উল্লেখ করেছেন, বাদীর ছোট পুত্র নিহত রাহি আহমদ ওরফে সাইম (১৭) এবং মামলার প্রধান অভিযুক্ত তাহির মিয়ার পুত্র তারেক আহমদ (১৫)’র মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো। আর ওই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে প্রধান অভিযুক্তের বাড়িতে নিহত সাইমের যাতায়াত ছিলো। এছাড়া প্রায়ই মামলার অভিযুক্তরা নিহত সাইমকে মোবাইল কল করে তাদের (অভিযুক্ত) বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এবং তারেকের সাথে খেলাধুলা করে আবার বাড়িতে চলে আসে। গত ২৪ নভেম্বর বাদীর পুত্র সাইম বিবাদীদের বাড়িতে থাকিতো, বাড়িতে ফিরে না আসায় গত ২৭ নভেম্বর দুপুর ৩ টার দিকে বাদী নিজে গিয়ে তার পুত্রকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার সময় বাদীর পুত্র সাইম রাস্তার মাঝখানে আসিয়া বাদীকে দেখায় যে, মামলার প্রধান অভিযুক্তের বোন ও এই মামলার ২নং অভিযুক্ত নিলুফা বেগম (৩৪) পার্শ্ববর্তী দোকানদার দিলু মিয়ার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছে। এরপর বাদীর পুত্র সাইম নিজের বাড়িতে এসে গোসল করে। এরপর সন্ধ্যা অনুমান ৬টার দিকে তাহির আলী তাহাদের বাড়িতে যেতে বললে সাইম ২নং অভিযুক্ত নিলুফা বেগমের দেওয়া টাকা দোকানের মালিক দিলু মিয়াকে দিয়ে পুনঃরায় অভিযুক্তদের বাড়িতে যায়। রাত অনুমান ৯টার দিকে প্রধান অভিযুক্ত তাহির মিয়া বাদীর পাশের ঘরের মায়া বেগমকে ফোন দিয়ে সাইম বাড়িতে আছে কি না জানতে চায়? তখন উক্ত মায়া বেগম বাদীর ঘরে এসে বাদীকে সাইমের কথা জিজ্ঞেস করে। তখন মায়া বেগমের মোবাইলে প্রধান অভিযুক্ত তাহির মিয়া ফোন করিলে বাদী তার (তাহির) সাথে মোবাইলে কথা বলেন। তাহির মিয়া বাদীকে সাইমের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি (বাদী) তাকে (তাহির) সাইম বাড়িতে আসে নাই বলে জানান। তখন মামলার প্রধান অভিযুক্ত তাহির মিয়া বাদীকে বলে সাইম মনে হয় তার (তাহির) পুত্র তারেকের সাথে খেলতে বাহিরে গেছে। এর কিছু সময়ের মধ্যেই এলাকার লোকজনের মুখে বাদী শুনতে পান তার (বাদী) পুত্র মামলার অভিযুক্তদের বাড়িতে গলায় উড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে বাদী মামলায় বর্ণিত সাক্ষীদের নিয়ে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে তাহির মিয়ার বসতঘরের উত্তর পাশের কক্ষের ছাদের রডের হুকের সাথে সাইমকে ঝুলান্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় বাদী সেখানে উপস্থিত সবাইকে তার পুত্র সাইমকে নামানোর জন্য বলিলে স্থানীয় লোকজন উড়না কাটিয়া সাইমকে নামাইয়া দ্রুত বিশ্বনাথ সন্ধানী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদীর পুত্র সাইমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর বাদী তার সাথে থাকা লোকজন’সহ সাইমের দেহ নিয়ে পুনঃরায় বিবাদীদের বাড়িতে যান।

বাদী তাহার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তার পুত্র রাহি আহমদ ওরফে সাইমকে মামলার অভিযুক্তরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সকলের যোগসাজশে গত ২৭ নভেম্বর রাত অনুমান ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে হত্যা করে মামলার প্রধান অভিযুক্ত তাহির মিয়ার বসতঘরের উত্তর পাশের কক্ষের ছাদের রডের হুকের সাথে ঝুলাইয়া রেখেছে। এরপর বাদীর পুত্র রাহি আহমদ ওরফে সাইমের পোষ্ট মর্ডাম শেষে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ