আজ, , ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :
«» দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩০, আহত অর্ধশতাধিক «» জগন্নাথপুরে গরুকে গোসল করাতে গিয়ে যুবক নিখোঁজ «» ছাত্র মজলিস সিলেট জোনের দ্বি-মাসিক জোনাল দায়িত্বশীল সভা অনুষ্ঠিত «» আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২৫ «» শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে নৈতিক শিক্ষার খুবই অভাব- ছাত্র মজলিস «» বাস থেকে নামিয়ে ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই, আসামি যুবদল নেতা «» পুলিশবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জনতার হাতে আটক ছয় «» দেশের বিরোদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে, ইনশাল্লাহ: আল্লামা মামুনুল হক «» ছাতকে প্রবাসীদের অর্থায়নে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করলো গ্রামবাসী «» জগন্নাথপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার





চিরকুট লিখে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

ডেস্ক রিপোর্ট :: বাবা-মাকে চিরকুট লিখে অর্পিতা মজুমদার (১৮) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১১জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর বাগবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অর্পিতা ওই এলাকার রবীদ্রনাথ মজুমদারের মেয়ে ও সিলেট অগ্রগামী সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষা ছিল। অর্পিতা সিলেট নগরীর মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়। শনিবার (১৩জুলাই) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্পিতার বাবা রবীদ্রনাথ মজুমদার।

 

পুলিশ সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে অর্পিতার শয়ন কক্ষের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এসময় অর্পিতার একটি চিরকুট পাওয়া যায়। যাতে লেখা রয়েছে- ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না, বাবা-মা ওহম তোমরা ভালো থেকো।’

 

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অর্পিতার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র শুক্রবার দুপুর থেকে বিভিন্ন গ্রুপে ও আইডিতে স্ট্যাটাস দেয়া হচ্ছে দুটি ছবি সংযুক্ত করে।এরমধ্যে Troll Colleges & Universities Sylhet নামে একটি গ্রুপের লেখা হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- ‘গতকাল ফিজিক্স পরীক্ষা দিয়ে বাসায় গিয়ে অগ্রগামীর একটা মেয়ে সুইসাইড করছে। পরীক্ষার হল সিলেট মঈন উদ্দিন কলেজ। মেয়েটা পরীক্ষার হলে অসুস্থ হয়ে গেছিল। হলের গার্ডরা সহানুভূতি তো দূরের কথা ‘ভঙ্গি করতেছে, কত ঢং’ এসব বলে ব্যঙ্গ করছে। তার হলের কিছু মেয়ের কাছে শুনলাম ওই মেয়েটার খাতা নাকি ১ ঘন্টার মতো নিয়ে রেখে দিছিল। খুব ই দু:খজনক! এক্সাম হলে ইনভেজিলেটর হিসেবে কিছু বেসিক ক্রাইটেরিয়া আছে। এর থেকে বেশি কিছু করে বাচ্চাদের দয়া করে মানসিকভাবে দুর্বল করবেন না। অতিরঞ্জিত কোন কিছুই ভালো না। আমার মনে হয় হলে এমন পরিবেশ যদি থাকে এখনই সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। এই। সিলেট ছোট্ট একটা শহর। এমন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য যে শিক্ষক দায়ী এবং এরকম যারা করেন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ুক।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে অর্পিতার বাবা রবীদ্রনাথ মজুমদার বলেন, আমার মেয়ে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী না করে একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে সেটা আমার মেয়ে বলেনি বা আমরা কেউ উপস্থিত ছিলাম তাই আমরা কোনো কিছু বলতে পারছি না। শুধু আমার মেয়ে আমাকে বলেছে পরীক্ষা খারাপ হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে শনিবার (১৩ জুলাই) সিলেট সরকারী অগ্রগামি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক হ্যাপী বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষা ছিল। অর্পিতা সেদিন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পরীক্ষা শেষে তার পিসির (ফুফু) বাসায় যায়। সেখান থেকে তার মাকে ফোনে জানিয়েছিল পরীক্ষা ভালো হয়নি। ৮-১০টা নৈর্ব্যক্তিক হয়েছে বলে জানায়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে পিসির বাসা থেকে বাসায় যায়। তখন বাসায় পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া তার ছোট ভাই ওহম ছিল। পরবর্তীতে তার কক্ষে চলে এবং এই ঘটনা ঘটে।

পরীক্ষার দিনে হল কক্ষে কি ঘটনা ঘটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কিছু বলছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি বা এই রকম কোনো ঘটনার কথা আমাদেরকে জানানো হয়নি। তবে, আমি আমার পক্ষ থেকে বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টির ব্যাপারে জানিয়েছি। যদি এই রকম কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। অর্পিতা আমাদের স্কুলে তৃতীয় শ্রেণী থেকে পড়ালেখা করছে। অত্যন্ত ভালো মেয়ে ছিল।পড়ালেখার পাশাপাশি গান ও নাচে পারদর্শী ছিল।

 

মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। আমাদের কলেজে আটটি প্রতিষ্ঠানের দুই হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতেছে। ওইদিন আমাদের কলেজে এই রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া ওই মেয়েটি মারা গিয়েছে তার বাসায় এখানে কলেজ কি অপরাধ করেছে?

 

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ১ ঘন্টার মতো বিদ্যুৎ ছিল না। তখন তৃতীয় তলায় আমার একটি পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করলে দুজন পরীক্ষার্থী জানায় ফ্যান না থাকায় গরমের কারণে তারা অসুস্থবোধ করছে। তাদের কথা শুনে আমি পরদিনেই ৬টি ফ্যান এনে লাগিয়েছি। এছাড়া ওইদিন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্টরাও পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছিলেন। তখন পরিস্থিতি কেমন ছিল বলেন। কোনো শিক্ষার্থীই আমাদের প্রতিপক্ষ না। বোর্ড সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে কয়েকজন অসুস্থবোধ করছিলো তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুক্রবার ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মারা যাওয়া অর্পিতার কক্ষ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায় সেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না, বাবা-মা ওহম তোমরা ভালো থেকো।’ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অপমৃত্যু মামলা দেয়া হয়েছে।

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ