ডেস্ক রিপোর্ট :: নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালে। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০২৬ সাল থেকে সেই পরীক্ষা হবে ডিসেম্বর মাসে।
নতুন কারিকুলামে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে লিখিত মূল্যায়নে ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নে ৩৫ শতাংশ। পুরো পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টাব্যাপী। এসব নিয়ম ঠিক করে প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে পরীক্ষা পদ্ধতি। আগামী ৩১ মে’র মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে সেই পরীক্ষার নাম এসএসসি থাকবে নাকি অন্য কোনো নাম হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন কারিকুলাম নিয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। সেখানে স্কুলের বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক (ষান্মাষিক) মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সাতটি ধাপ বা স্কেলে নির্ধারণ করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। সেখানে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরে। সবকিছু চূড়ান্ত করতে এবং চলতি মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একটি বৈঠক ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে। সেখানে পরীক্ষার সময় বাড়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আসতে পারে। সবকিছু আরেকটি বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়ার পর সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি জানান, মূল্যায়ন নির্দেশনা ঠিক করতে আগামী ২৭ তারিখ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত হতে পারে নতুন কারিকুলামে মূল্যায়ন পদ্ধতি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, বছরের শুরুতে এসএসসি পরীক্ষা না নিয়ে বছরের শেষে নিলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবর্ষ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবে। এসব দিক বিবেচনায় ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এসএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বর নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়। চলতি মাসে চূড়ান্ত বৈঠকের পর তা বলা যাবে।
৫ ঘণ্টা হবে এসএসসি পরীক্ষা:
এর আগে মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে বলা হয়, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে হবে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা। এই পাবলিক পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এতে থাকবে লিখিত পরীক্ষাও। প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নে বিরতিসহ ৫ ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। বর্তমান সময়ের মতো আলাদা কেন্দ্রে মূল্যায়নে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা।
আর এসএসসি পরীক্ষা হবে কেবল দশম শ্রেণির বিষয়ের ওপর। অর্থাৎ আগে নবম-দশম এই দুই শ্রেণির ওপর পরীক্ষা হলেও নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির বইয়ের ওপর পরীক্ষা হবে। এই শ্রেণিতে মোট ১০টি বিষয় পড়বে শিক্ষার্থীরা। বিষয়গুলো হলো— বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মশিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি।
এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সার্বিক আয়োজনের জন্য বিষয়ভিত্তিক ৬০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্স পুল (বিশেষজ্ঞ দল) গঠন করা হবে। প্রথমে তাদের বোর্ডের আয়োজনে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হবে।