ডেস্ক রিপোর্ট :: এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেন মোট ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন। অর্থাৎ ফেল করেছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৯ জন। তাদের মধ্যে ১১টি বা সব কটি বোর্ডের ১ লাখ ৯২ হাজার শিক্ষার্থী মোট ৫ লাখ ১ হাজার ২৯৪টি খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এবার সব পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ফেল করা শিক্ষার্থীরা ওই ফল প্রত্যাখ্যান করে সবাইকে পাস করিয়ে দেয়ার দাবিতে শিক্ষা বোর্ড ভাঙচুর চালান। সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে বোর্ডের বেঁধে দেয়া সময়সূচি অনুযায়ী ফেলকারীরা খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেন। ৫ লাখেরও বেশি খাতা চ্যালেঞ্জের ঘটনা এইচএসসিতে কোনো একক শিক্ষাবছরের রেকর্ড বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৬ পরীক্ষার্থী ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮০টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। অবশিষ্টরা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের। তবে এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কোনো পরীক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করেনি।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ৫৯ হাজার ৬৭৮ পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৮০ হাজার ৬০টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ১৫ হাজার ৩৭৮ পরীক্ষার্থী চ্যালেঞ্জ করেছেন ৩৯ হাজার ২৬৩টি খাতা। কুমিল্লা বোর্ডে ২১ হাজার ৬১৪ পরীক্ষার্থী ২১ হাজার ৬১৪টি খাতা, যশোর শিক্ষা বোর্ডে ২৪ হাজার ২২১ পরীক্ষার্থী ৬৬ হাজার ৫৮টি খাতা, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২২ হাজার ৩২৪ পরীক্ষার্থীর ৬৮ হাজার ২৭১টি খাতা, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ৭ হাজার ২১ পরীক্ষার্থী ২৪ হাজার ২৬৫টি খাতা, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ৬ হাজার ৩০৬ পরীক্ষার্থী ১০ হাজার ৬৯টি খাতা, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ১৪ হাজার ৫২৫ পরীক্ষার্থী ৩৭ হাজার ৬৩৯টি খাতা এবং ময়মনসিং শিক্ষা বোর্ডে ১৮ হাজার ৬৯৯ পরীক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন ৪৬ হাজার ২৪১টি। এছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট ২ হাজার ৭১৪ পরীক্ষার্থী ৭ হাজার ৮১৪টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে কোনো পরীক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করেননি। এর আগে ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমানের ফল সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়।
এদিকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এ বছর গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মোট ১১টি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে পাসের হার বেশি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে। এই বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষায় এবার পাসের হার ছিলো ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম, ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় পাসের হার ৮৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আর পাসের হার সবচেয়ে কম ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে। এসব বোর্ডের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এ বছর সব বোর্ড মিলিয়ে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। এদের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী। কারিগরিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৯২২ জন। অবশিষ্ট ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ জন সাধারণ শিক্ষাবোর্ড থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছেন।