মুহাম্মদ আবু সালেহ:
আল্লাহতায়ালা খাদ্যকে মানুষের জন্য জরুরি উপকরণ করেছেন। খাদ্য গ্রহণ ছাড়া মানুষ বাঁচে না। খাদ্যের মাধ্যমে শরীরের সুস্থতা ও ভারসাম্য ঠিক থাকে। আর সুস্থতা এবং শরীরের ভারসাম্য মানুষকে যেমন কাজকর্মে স্পৃহা জোগায় তেমনি কাজটি যথাযথ আঞ্জাম দেওয়ার আগ্রহও সৃষ্টি করে। তাই এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মানব সমাজকে ইসলাম লাগামহীন ছেড়ে দেননি। বরং রয়েছে যথাযথ নির্দেশনা।
মানব রুচিতে যা অরুচিকর মনে হবে তা অনায়াসে পরিত্যাগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই খাদ্য হালাল হতে হবে। এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসূলগণ! পবিত্র হালাল বস্তু আহার করুন এবং সৎ কাজ করুন। (সূরা মুমিনুন : ৫১)।
আয়াতে হালাল খাবার গ্রহণ করতে বলা হয়েছে এবং নেক আমলের আদেশ করা হয়েছে। আর হালাল খাদ্য খেয়ে ইবাদত করলেই কলব ইবাদতের স্বাদ অনুভব করবে এবং আল্লাহর কাছে তা মাকবুল হওয়ার অতি নিকটে পৌঁছবে। নবিজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি দশ দিরহাম দিয়ে কাপড় ক্রয় করে আর তন্মধ্যে একটি দিরহাম হারাম হয়, সে কাপড়ে তার নামাজ আদায় হবে না। (মুসনাদে আহমাদ-৫৭২৩)। খাবারের মানদণ্ডে আল্লাহতায়ালা আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘হে মানব সম্প্রদায় পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার কর।’ (সূরা বাকারা : ১৬৮)।
মুমিনের আহার্য উপার্জন হতে হবে বৈধ পন্থায়। তাহলে এ খাদ্য স্বাস্থ্যের পুষ্টি জোগাবে, কলবের জন্য উত্তম খাদ্যে পরিণত হবে, আমলের স্পৃহা ও স্বাদ অনুভব হবে। পক্ষান্তরে শরিয়ত যে খাদ্যগুলোকে স্বাস্থ্যের অনুপযোগী, মন্দ, অনুত্তম ও হারাম করেছে সেগুলো পরিহার করে চলতে হবে। অন্যথায় এগুলোতে বাহ্যিক কিছু ফায়দা দেখা দিলেও ক্ষতির সম্ভাবনাই থাকবে বেশি।
এতে নুরের পরিবর্তে কলবের মাঝে ‘জুলমাত’ সৃষ্টি হয়। যার ফলে একদিন সত্যবিমুখ হয়ে যাওয়ারও সমূহ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। উপার্জিত খাদ্য হালাল হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কর না।’ (সূরা নিসা : ২৯)।
আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, অবৈধ পন্থায় উপার্জিত খাদ্য গ্রহণ করা শরিয়তে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নবিজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ এলোমেলো চুলে, ধুলায় ধূসরিত হয়ে সকালবেলা বলবে হে প্রভু! হে প্রভু! অথচ তার খাবার হবে হারাম, পানীয় হবে হারাম, পরিধেয় বস্তু হবে হারাম এবং হারাম বস্তু দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করবে তাহলে কীভাবে তার দোয়া কবুল করা হবে।’