নিজস্ব প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের ছাতকে উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে মানধরের প্রতিবাদে প্রতিষ্টানের বিতর্কিত সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদের শাস্তিসহ অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানবন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ছাতক-সিলেট সড়কে শিক্ষার্থীরা একর্মসূচি পালন করে। এর আগে প্রতিষ্টানের বিতর্কিত সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদের অপসারণের দাবি জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে থানার এসআই আখতারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সড়কে অবরোধককারী শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেয়। পরে বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরবর্তীতে ছাতক ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালান। এদিকে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক পক্ষ শিক্ষকের অপসারণ চাইলেও ওই বিদ্যালয়ে অপর শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে বহাল রাখার দাবি তুলেন। প্রায় ঘন্টাখানেক পর পুলিশ, সেনাবাহিনী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষম সমিতির সেক্রেটারিসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানা যায়, গত ১৩ নভেম্বর বিদ্যালয়ের বারান্দায় গল্প করছিল ৭ম শ্রেনির ছাত্র মাহিন আহমদ ও রবিউল হাসান শাওন। অভিযোগ উঠেছিল ওই ছাত্ররা তাদের শিক্ষক শাহিন আহমদকে গালাগাল করেছে। বিষয়টি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে তাৎক্ষনিক ছাত্র দুইজনকে টেনে হেচড়ে ক্লাসে নিয়ে স্টীলের স্কেল ও গাছের ডাল দিয়ে তাদেরকে ব্যাপক মারধর করেন ওই শিক্ষক। এক পর্যায়ে নিজের পায়ের জুতা দিয়ে ছাত্র দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি। নির্যাতনে আহত মাহিন আহমদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অপর ছাত্রকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরদিন শিক্ষার্থী মাহিন আহমদের মা, স্থানীয় হাসনাবাদ গ্রামের শাহেদ আলীর স্ত্রী হাছনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ১৫ নভেম্বর আহত ছাত্র দুইজনকে দেখতে তাদের বাড়িতে যান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ফজলুল করিম বকুলসহ হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। তারা ছাত্রদের অভিভাবকদের শান্তনা দেন। বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য রোববার ১৭ নভেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক মন্ডলীদের সমন্বয়ে বৈঠক করে বিষয়টি নিস্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেন শিক্ষক নেতা। সাথে ছিলেন আলহাজ্ব আয়াজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়দুল ইসলাম, হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই মো. কামাল, সহকারী শিক্ষক সাজিদুর রহমান, সঞ্জয় কুমার দাশ, বিধান তালুকদার প্রমুখ। কিন্তু ওইদিন সকালে শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও অবরোধ করায় ব্যস্তে গেছে নিস্পত্তির মতো উদ্যোগ।