ডেস্ক রিপোর্ট :: দুই বছর আগে ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষ মুখোমুখী হয়েছিল শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায়। দুই বছর পর ঠিক একইসময়ে আরেকটি ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখী সিলেটবাসী। এক মাসের ব্যবধানে দু-দুবার বন্যায় কবলে পড়ে সিলেটবাসী। গত মে মাসের শেষের দিকে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের নেমে আসা পানিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে পড়ে। এতে সিলেটের সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কয়েক লাখো মানুষ হয়ে পড়ে পানিবন্দি।
পরিবেশবাদী ও নদী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অকালবন্যার জন্য নদীর তলদেশে কয়েক মিটার পুরু পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য জমে যাওয়া দায়ী। খননের অভাবে সুরমা ও কুশিয়ারা নাব্য হারিয়ে ফেলে। যার ফলে এই বন্যা। এ ছাড়া সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরের রেকর্ড সংখ্যক বৃষ্টিপাত হয়। এই অতিবৃষ্টির পানি এসে সিলেট অঞ্চলে অল্প সময়েই বন্যা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল। এবারে হঠাৎ বন্যার পেছনে মানুষের তৈরি কারণ আছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এবারের বন্যার কারণ হিসেবে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হলো কিশোরগঞ্জের ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইনের অল-ওয়েদার সড়ক। ইটনা-মিঠামইনে যে বড় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে চলমান বন্যার জন্য তাকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই পোস্ট করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে রাস্তার কারণে হাওর থেকে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। আর পানি প্রবাহিত হওয়ার যে কালভার্ট দেওয়া হয়েছে তাই অনেক ছোট।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সিলেটের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের সড়ক দিয়ে পানি পারাপারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। এই বন্যার মধ্যে আমার সেই রাস্তাকে পরিদর্শন করবো। পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সিলেট নগরকে আগাম বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সুরমা নদী ড্রেজিং করা হবে। নদীতে পলিমাটি থাকার ফলে এর আগেও ড্রেজিং কাজ ব্যহত হয়েছিল। উজান থেকে আসা পানির বিভিন্ন পলিমাটিও আসে সে পলিমাটি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। প্রকৌশলীদে সাথে আলাপ করেছি দ্রুত সুরমা নদী ড্রেজিং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।