ডেস্ক রিপোর্ট :: আবাসন সংকট সামাল দিতে বিভিন্ন হোটেলে রাখা আশ্রয়প্রার্থীদের সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে আসার চিন্তা করছে যুক্তরাজ্যের সরকার৷ অভিবাসীদের আগমন বেড়ে যাওয়া এবং আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেলে রাখার প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেছেন স্থানীয়রা৷ এর জের ধরে সরকার নতুন এই পরিকল্পনা নিয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে আসা শাবানা মাহমুদ খুব তাড়াড়াতি এই পরিকল্পনাটি প্রকাশ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এই রাজনীতিবিদকে একটা চ্যালেঞ্জিং সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ কারণ, গত শনিবারও অন্তত এক হাজার অভিবাসী ফরাসি উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন৷ চলতি বছর সব মিলিয়ে ৩০ হাজার অভিবাসী এসেছেন দেশটিতে। যুক্তরাজ্য জুড়ে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব ক্রমেই বাড়ছে৷ এপিংয়ের বেল হোটেলকে ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে৷ এমন প্রেক্ষাপটে কয়েকটি হোটেলে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ফ্রান্সের আদলে জার্মানির সঙ্গেও একটি রিটার্ন চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করছেন ব্রিটিশ মন্ত্রীরা। অভিবাসন ইস্যুতে লাগাম টানতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার৷ এমনকি, সীমান্তমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ঈগল, পুলিশবিষয়ক মন্ত্রী ডায়ানা জনসনকেও সরিয়ে দিয়ে অন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ আর আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারকে দেয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেছেন, সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার জন্য সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের কথা ভাবছে৷ কারণ তারা হোটেল থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। জন হিলি আরো বলেছেন, সরকারের কর্মকর্তারা অন্যান্য ‘বেসামরিক’ আবাসনের বিষয়টিও বিবেচনা করছে। বর্তমানে ৩২ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী হোটেলে আছেন৷ ফলে, করদাতাদের অর্থের অপচয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হওয়ার পর হোটেলগুলোতে রাখা আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত সরিয়ে নেয়ার বিষয়টিতে জোর দিচ্ছে লেবার পার্টির সরকার৷ বর্তমানে এসেক্সের পরিত্যক্ত সামরিক ঘাঁটি আরএএফ এবং কেন্টের পরিত্যক্ত সামরিক ঘাঁটি নেপিয়ার ব্যারাকে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হচ্ছে৷ এ দুটি কেন্দ্র অবশ্য চালু করেছে সাবেক রক্ষণশীল সরকার। রোববার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের সম্ভাব্য অস্থায়ী আবাসনের জন্য আরো ‘সামরিক এবং বেসামরিক’ স্থান খুঁজছে সরকার। তার মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো স্থান নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন হিলি৷ কিন্তু বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে কাজ চলমান রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের যে উদ্যোগ আপনারা দেখছেন, তা শুধু স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাজ নয়, এটি সম্মিলিত সরকারি প্রচেষ্টা। অভিবাসন ইস্যুতে বেশ বেকায়দায় রয়েছে ব্রিটিশ সরকার। বিরোধী মহল থেকে আগাম নির্বাচনের দাবিও উঠেছে৷ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড্যারেন জোন্স এমন বিষয় একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে, ইভেট কুপার অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তাকে স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে গুঞ্জন রয়েছে, সেটাও প্রত্যাখ্যান করেছেন ড্যারেন জোন্স৷ তিনি বলেছেন, ইভেট কুপার যুক্তরাজ্যের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ‘উজ্জ্বলতা’ ছড়াবেন৷


যুক্তরাজ্যের কঠোর সিদ্ধান্ত : আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হবে সামরিক ঘাঁটিতে
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৪১ পূর্বাহ্ন|
পোস্টটি ১১১৪ বার পড়া হয়েছে








