স্পোর্টস ডেস্ক :: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আজ দুপুর দেড়টায় হোটেল টাওয়ার ইন-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ ঘোষণা দেন তামিম। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে বারবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনার। তামিম বলেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালকের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেক দিন ধরেই আমি ভাবছিলাম। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য তামিম ধন্যবাদ দিয়েছেন সতীর্থ, কোচ, বিসিবি, পরিবার ও সমর্থকদের। তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তাগণ, আমার পরিবার ও যাঁরা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের সবার অবদান ও ভালোবাসায় আমি চেষ্টা করেছি সব সময় দেশের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে।’
অবসর পরবর্তী জীবনের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তামিম।
তিনি বলেন, ‘জীবনের নতুন অধ্যায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ।’
ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের।
কান্নাভেজা কণ্ঠে তামিম বলেন, ‘আমি সবসময়ই একটা কথা বলেছি, আমি ক্রিকেট খেলি আমার বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য। আমি জানি না, এই ১৬ বছরে তাকে কতটা গর্বিত করতে পেরেছি।’
এরপর তামিম বলেন, ‘আমি আরও কয়েকজনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার সবচেয়ে ছোট চাচা, যিনি ইন্তেকাল করেছেন, তার নাম আকবার খান, যার হাত ধরেই আমি প্রথম ক্রিকেট বলে টুর্নামেন্ট খেলেছি। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের তপন দা নামে একজন কোচ আছেন, তার কাছে আমি ঋণী।’
তামিম বলেন, ‘আসলে আমার খুব বেশি কিছু বলার নেই। আমি আসলেই নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি কতটা ভালো খেলোয়াড় ছিলাম, আদৌ ভালো ছিলাম কি না, আমি জানি না। তবে আমি সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি যখনই মাঠে নেমেছি আমি আমার শতভাগ দিয়েছি।’
ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি এবং ফিফটি করেছেন ৫৬টি। টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই ফরম্যাটে দেশের হয়ে শুধু তামিমেরই সেঞ্চুরি রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।