কর্মীদের উদ্দেশ্যে মিজান লিখেন, ‘আপনাদের মানসিক অবস্থা আমি বুঝি, কিন্তু আপনাদের বুঝানোর সাধ্য আমার নেই। আপনাদের ভালোবাসার কাছে আমি চিরঋণী। আমি আবেগাপ্লুত। সম্মানীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমার দল বিএনপি ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। যদিও দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে এই মনোনয়ন পরিবর্তনশীল, চূড়ান্ত নয়। আমি বিএনপির একজন নগন্যকর্মী। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া বিএনপি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আমি মিজান চৌধুরী বিএনপির সৃষ্টি। তাই আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চূড়ান্ত মনোনয়নের অপেক্ষায় আছি। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি কর্মীদের সান্ত্বনা দিয়ে লিখেন- ‘আমি আপনাদের মিজান চৌধুরী রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফানে, পানি-কাদায় বেড়ে উঠা রাজনৈতিক কর্মী। ছাতক উপজেলা নির্বাচনে আপনাদের বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান। পতিত স্বৈরাচারী সরকার প্রধান শেখ হাসিনার আমলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সকল আন্দোলন সংগ্রামে আপনাদের সঙ্গী হিসাবে ছাতক-দোয়ারায় তথা গোটা সুনামগঞ্জ জেলায় সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি। অক্লান্ত পরিশ্রম ও সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ব্যাপক জনসমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ছাতক- দোয়ারার মাটি বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। যার ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে দেশের ক্লান্তিলগ্নে ২০১৮ সালের নির্বাচনে উপহার হিসেবে ছাতক-দোয়ারার জনগণের আশা আকাক্সক্ষা পূর্ণ করে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নানামুখী ষড়যন্ত্র, সীমাহিন জুলুম-নিপীড়ন এবং মধ্য রাতের ভোট ডাকাতির ঐ নির্বাচনে মাত্র ১ ঘন্টা সুযোগ পেয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও ছাতক- দোয়ারাবাসী লক্ষাধিক ভোট দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ঐ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনীর হাতে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন।
দীর্ঘ ১৬ বছর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দলীয় নেতাকর্মী এবং ছাতক- দোয়ারাবাজারবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণ আন্দোলনকে বেগবান করেছে। ছাতক-দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ জেলা এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তৎকালিন প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছাতক-দোয়ারায় হাজার হাজার জনতা নিয়ে রাজপথে সক্রিয় কর্মসূচি পালনে স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়াগুলো এর স্বাক্ষী রয়েছে। এজন্য দলীয় নেতাকর্মী ও ছাতক-দোয়ারাবাজারবাসীর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।’
তিনি লিখেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিলেট জেলা সভাপতি থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছি। দলের ভ্যানগার্ড হয়ে বেঁচে থাকতে চাই। আমার বিশ্বাস দল আমার প্রতি সুবিচার করবে। আমি ১৯ দফার স্বপ্নে গড়ে উঠা বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের আধুনিক মডারেটর তারেক রহমানের ৩১ দফার আলোকে নতুন প্রজন্মের নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে আগের মতোই ছাতক দোয়ারার জনগণের পাশে সক্রিয় থাকব। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চূড়ান্ত মনোনয়নের অপেক্ষায় আমরা থাকবো।’
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, কর্মীরাই তাঁর রাজনৈতিক প্রাণশক্তির উৎস। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে টানা দেড় যুগ তাদের পাশে ছিলেন, এখনো থাকবেন বলে উল্লেখ করেন মিজান চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বেশি ভোটারের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক- দোয়ারাবাজার) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের নাম ঘোষণা করেছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গেল তিন নভেম্বর দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের ২৩৭ আসনের নাম ঘোষণার সময় কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের নাম ঘোষণা করেন। এরপর থেকে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছেন। তবে ওই দিনের পর এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বুধবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা) মিজান চৌধুরী নির্বাচনী এলাকায় ফিরেন নি। তাঁর বলয়ের নেতারাও বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায় নি










