সুযোগ ও সম্ভাবনা-
বাংলাদেশি নাগরিক যেমন ‘সিজনাল ওয়ার্কার’ হিসেবে কৃষি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট শিল্পে কাজ করার সুযোগ থাকতে পারে। উচ্চশিক্ষিত বা বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি ইউ ব্লু কার্ড বা সিঙ্গেল ওয়ার্ক রেসিডেন্স পারমিট পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পেতে পারে। যদি কেউ রিমোট বা অনলাইন কাজ করার সুযোগ খুঁজে থাকে, তাহলে নতুন নিয়মে ‘ডিজিটাল নামা’ বা রিমোট ওয়ার্ক পারমিট পদ্ধতিও এসেছে।

কাজের ভিসা প্রক্রিয়া-
বুলগেরিয়ায় কাজ করতে হলে প্রথম ধাপে দরকার একটি চাকরির অফার লেটার।

নিয়োগকর্তা নিজ দেশের এজেন্সি থেকে অনুমোদন নিয়ে কর্মীর জন্য সিঙ্গেল ওয়ার্ক এন্ড রেসিডেন্স পারমিট আবেদন করে। এই অনুমোদনপত্র হাতে পেলে বাংলাদেশে অবস্থিত বুলগেরিয়ার কনস্যুলেট বা দিল্লিতে অবস্থিত দূতাবাসে টাইপ ডি ভিসার আবেদন করা যায়। এর সঙ্গে প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট, চাকরির চুক্তি, স্বাস্থ্য বিমা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র। ভিসা অনুমোদনের পর গন্তব্য বুলগেরিয়া; সেখানে পৌঁছে স্থানীয় মাইগ্রেশন অফিসে নিবন্ধন করলেই শুরু হয় নতুন জীবন।

চাহিদা কোন খাতে-
বুলগেরিয়ায় বর্তমানে শ্রমিকের ঘাটতি বেশি নি¤েœাক্ত খাতগুলোতে  নির্মাণ, উৎপাদন ও কারখানা, কৃষি ও মৌসুমি কাজ, রেস্টুরেন্ট ও সার্ভিস সেক্টর।

প্রতারণার ফাঁদে সাবধানতা-
বাজারে এখন অনেক ভুয়া এজেন্সি ও দালাল সক্রিয়। ‘৫০ হাজার টাকায় বুলগেরিয়া ভিসা’ এমন প্রতারণামূলক অফারে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শ্রম মন্ত্রণালয় ও বায়োমেট্রিক রিক্রুটিং সংস্থার নিবন্ধিত চ্যানেল ছাড়া অন্য মাধ্যমে যাওয়াকে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।

করণীয় ও প্রস্তুতি-
প্রথমে নিয়োগ পাওয়া; বুলগেরিয়ার কোনো কোম্পানি আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার আগেই তারা কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। আপনি শুধু নিয়োগ চিঠি পেলে সব কাজ হয়ে যাবে না। এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস যেমন বৈধ পাসপোর্ট, অপরাধমুক্ত সনদ, স্বাস্থ্যবিমা, বাসস্থান সনদ, নিয়োগচুক্তি ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। ভিসা টাইপ ‘উ’ কাজ করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা (ঞুঢ়ব উ) লাগতে পারে। ভাষা ও যোগাযোগের জন্য  বুলগেরিয়ান বা কমপক্ষে ইংরেজি ভাষায় সক্ষম হলে সুবিধা বেশি পাওয়া যাবে। উপযুক্ত চাকরির ধরন খুঁজতে হবে যেমন সিজনাল (কৃষি/হোটেল/রেস্টুরেন্ট) কাজগুলো তুলনায় একটু সহজ হতে পারে। হিসাব-নিকাশ করতে হবে যেমন; বুলগেরিয়ায় বেতন, খরচ, বাসস্থান ইত্যাদি বিষয় ভালোভাবে যাচাই করুন বিশেষ করে বিদেশি হিসাবে গ্রহণযোগ্য কাজ কি না। বৈধভাবে কাজ করতে হবে মিথ্যা বা অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে যাওয়া হলে বিপদ আছে  এবং নিয়মতান্ত্রিক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা-
বাংলাদেশ সরকার যদি বুলগেরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শ্রমচুক্তি করে, তাহলে এই পথ আরও উন্মুক্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য নতুন ‘ইউরোপ উইন্ডো’ হয়ে উঠতে পারে।

শেষ কথা-
বুলগেরিয়া হয়তো এখনো দূরের দেশ, কিন্তু সঠিক তথ্য, দক্ষতা ও বৈধ পথ জানা থাকলে এই ইউরোপীয় মাটিই হতে পারে এক নতুন জীবনের সূচনা।