আজ, , ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :





অস্ট্রেলিয়ার ভিসার স্বর্ণযুগ : বাংলাদেশীদের বড় সুখবর

ডেস্ক রিপোর্ট :: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ সুখবর জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্টুডেন্ট ভিসা এভিডেন্সিয়ারি ফ্রেমওয়ার্কে (Student Visa Evidentiary Framework) বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো লেভেল–১ মর্যাদায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ, দ্রুত ও কম ব্যয়বহুল হবে। অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব হোম অ্যাফেয়ার্স মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বার্তায় জানিয়েছে, ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত সময়ের ভিসা ফলাফলের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর এভিডেন্স লেভেল হালনাগাদ করা হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্ত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে। এই প্রথম বাংলাদেশ লেভেল–১ মর্যাদা পেল, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার পথকে আরও উন্মুক্ত করে দেবে। এতদিন বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া সরকারের এসেসমেন্ট লেভেলের তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছিল। লেভেল–৩ দেশ হিসেবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতার মুখে পড়তে হতো। অতিরিক্ত কাগজপত্র, আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ, ইংরেজি দক্ষতার সনদসহ একাধিক নথি জমা দিতে হতো। লেভেল–১ এ উন্নীত হওয়ায় এখন এসব প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে। আবেদনকারীরা তুলনামূলকভাবে কম নথি জমা দিয়েই দ্রুত সময়ে ভিসার সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবস্থায় ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী দেশগুলোকে তিনটি লেভেলে ভাগ করেছে। এর মধ্যে লেভেল–১ হলো নিম্ন ঝুঁকির দেশ, লেভেল–২ মাঝারি ঝুঁকির, আর লেভেল–৩ উচ্চ ঝুঁকির দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঝুঁকির মানদণ্ড নির্ধারিত হয় সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হার, অতিরিক্ত অবস্থান, জাল নথি জমা এবং ভিসা জালিয়াতির ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে।

 

নতুন তালিকায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে লেভেল–১ এ। লেভেল–২ তে আছে ভারত, ভুটান, চীন, নেপাল ও ভিয়েতনাম। আর লেভেল–৩ তে রয়েছে ফিজি, ফিলিপাইন ও পাকিস্তান। উচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য যেখানে কাগজপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম কঠোর ও সময়সাপেক্ষ, সেখানে নিম্ন ঝুঁকির দেশের আবেদনকারীরা তুলনামূলকভাবে দ্রুত এবং সহজ প্রক্রিয়ায় ভিসা পেয়ে থাকেন। এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রার্থীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় দেশটির বাংলাদেশি এজেন্সি ও কনসালটেন্সিগুলোর কাছে এ আপডেট পাঠিয়েছে। শিক্ষা পরামর্শক ও অভিভাবকরা বলছেন, এটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। লেভেল–১ মর্যাদায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এখন অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার সুযোগ আরও সহজলভ্য হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়ায় সময় ও খরচ—দুটিই কমে আসবে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের বিশেষজ্ঞরা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এ অর্জন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদা বৃদ্ধি করবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য উন্নত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বাড়াবে।

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ