আজ, , ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :





আজ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

ডেস্ক রিপোর্ট :: বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি অপরিহার্য এতে কোন সেন্দহ নেই। বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য শক্তি বিএনপি। একটি ভারসাম্যপূর্ণ, প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে বিএনপির সক্রিয় ও কার্যকর উপস্থিতি প্রয়োজন। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু পূর্ব সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় দেশ যখন নেতৃত্ব হীন অবস্থায় চরম সন্ধিক্ষণে তখন একজন মেজর জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে স্বাধীনতা ঘোষণা করে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে পচাত্তরের পটপরিবর্তনে বিপ্লব, প্রতিবিপ্লবে যখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন অবস্থায় তখন আবারও মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ত্রাতা হিসাবে আবির্ভূত হন। আওয়ামী লুটপাটে দেশটা যখন তলাবিহীন ঝুড়ি হিসাবে বিশ্বমাচিত্রে প্রতিষ্ঠিত তখন সেই দেশটাকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে জিয়াউর রহমানের কল্যাণে। প্রকৃত পক্ষেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ত্রাতা। দেশের আপামরসাধারণ মানুষের ভালোবাসায় হয়েছিলেন ‘রাখাল রাজা’!

আসুন, দেখা যাক- বাংলাদেশের প্রাণ, জিয়াউর রহমান এবং ম্যাডাম খালেদা জিয়া তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অপরিহার্যতার কয়েকটি কারণঃ

(১) গণতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রধান বিরোধী শক্তি: বিএনপি একমাত্র রাজনৈতিক দল যা আওয়ামী লীগের একক আধিপত্যের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগকে জবাবদিহির আওতায় আনতে বিএনপির মতো দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য।

(২) জনভিত্তি ও রাজনৈতিক ঐতিহ্য: বিএনপি ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জন করে এসেছে। গ্রামীণ ভোটার, ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী, মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং জাতীয়তাবাদী মনোভাবাপন্ন নাগরিকদের মধ্যে দলটির ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে।

(৩) ক্ষমতায় থাকাকালীন উন্নয়নমূলক অবদান: বিএনপি শাসনামলে (১৯৯১-১৯৯৬, ২০০১-২০০৬) যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, শিক্ষাখাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন হয়েছে। তাদের সময়েই বাংলাদেশ প্রথমবার সংসদীয় পদ্ধতি ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের চর্চা দেখতে পায়।

(৪) দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক কাঠামোর অংশ: বাংলাদেশের রাজনীতি মূলত দুইটি প্রধান শিবিরে বিভক্ত- আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এই দুই দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও, এদের সংঘর্ষ থেকেই গণতন্ত্র ও রাজনীতির গতিশীলতা তৈরি হয়। বিএনপি ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা একতরফা হয়ে পড়ে।

(৫) সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকটে বিকল্প শক্তি হিসেবে আশার প্রতীক: বর্তমানে যারা সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবং রাজনৈতিক সংস্কার চায়—তারা বিএনপিকে বিকল্প হিসেবে দেখছে। দলটি imperfections থাকলেও তা গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে বিকল্প দিচ্ছে।

(৬) বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করার ইতিহাস: বিএনপি শুধু কোনো একটি গোষ্ঠী বা শ্রেণির দল নয়—এতে রয়েছে পেশাজীবী, ছাত্র, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি।

(৭) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে খালেদা জিয়ার যুগান্তকারী অবদানঃ বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ৯০-এর দশকে সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিএনপি সরকারের সময়েই “প্রাথমিক শিক্ষা আইন ১৯৯০” বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি কর্মসূচির সূচনা হয়।
গ্রামের অবহেলিত এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণে নন-ফর্মাল শিক্ষা বিস্তারে সহায়তা করা হয়।

(৮) মৃদুভাষী ম্যাডাম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সততা ও সাদামাঠা জীবনযাপনঃ বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও ব্যক্তিগত দুর্নীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা, সম্পদের ostentation পরিহার এবং গণমানুষের সাথে একাত্মতা খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে ব্যতিক্রমী নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিএনপির তৃণমূল নেতা কর্মী সমর্থকদের শ্রদ্ধা ভালোবাসায় হয়েছেন- “আমাদের মা”। আজ পর্যন্ত তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে কোনো বিলাসিতা বা অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ দূরের কথা, একটা প্রমাণযোগ্য একটা অভিযোগও জনগণের সামনে আসেনি। তিনি একজন গৃহিণী থেকে রাজনীতির নেতৃত্বে উঠে আসা নারী, যাঁর সততা অনেকের কাছে আজও অনুপ্রেরণার প্রতীক।

(৯) সবার আগে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা- প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়া: বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী (১৯৯১), যিনি তিনবার জনগণের ভোটে দেশের সর্বোচ্চ নির্বাহী পদে আসীন হয়েছেন। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি তিন বার পাঁচটি করে সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করে সব কয়টি নির্বাচনী আসনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এটি কেবল নারীর ক্ষমতায়নের নয়, গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের বিকাশেরও ঐতিহাসিক মাইলফলক। বিএনপির প্রয়োজনীয়তা শুধু রাজনৈতিক ভারসাম্য নয়- এটি শিক্ষা, নৈতিকতা এবং নেতৃত্বে নারীর অগ্রগতির বাস্তব উদাহরণ। বেগম খালেদা জিয়ার সততা, শিক্ষা বিস্তারে অবদান ও রাজনৈতিক দৃঢ়তা তাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অপরিহার্য রাজনৈতিক চরিত্রে পরিণত করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের রাজনৈতিক পরিপক্বতা, স্বচ্ছতা, দুরদর্শিতা, দেশপ্রেম এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। যেখানে আছে বিশ্বাস, আছে আস্থা এবং ভরসা।

 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি’র কর্মসূচি: আজ ১ সেপ্টেম্বর সোমবার বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে উপলক্ষে গতকাল রোববার থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো। গতকাল রবিবার বেলা ২ টায় রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের জেষ্ঠ্য নেতৃবৃন্দসহ দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীগণ অংশগ্রহণ করবেন। আজ ১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ১১ টায় বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর শেরেবাংলা নগরস্থ মাজারে বিএনপি মহাসচিবসহ দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মঙ্গলবার বেলা ২ টায় দলের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ