নিজস্ব প্রতিবেদক :: ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজিদুল ইসলামকে আটক করেছে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টার দিকে ওই বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দিরাই থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে ওই শিক্ষক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক সাজিদুল কথা বলতে বলতে ওয়াশরুমের দিকে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে মেয়েটিকে প্রলোভন দিয়ে কুপ্রস্তাব দেন এবং ওই ছাত্রীর হাত ধরে ওয়াশরুমের ভেতরে নিয়ে যাবার জন্য জোরজবরদস্তি করেন। মেয়েটি চিৎকার দিয়ে হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে সেখান থেকে এসে অন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ ছাত্রছাত্রী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা বিদ্যালয়ে মিছিল করে প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগ দেয় এলাকাবাসী।
অবস্থা বেগতিক দেখে প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষের দরজা জানালা বন্ধ করে ভেতরে আশ্রয় নেন। বিক্ষুব্ধ লোকজন কয়েক ঘন্টা ওই কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রধান শিক্ষক সাজিদুল ইসলাম পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করে এলাকাবাসীর হাতে তুলে দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধান শিক্ষককে তাদের হেফাজতে নিয়ে আসে।
অভিভাবকরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পর থেকে ওই স্কুলের ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নসহ নানাভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন ওই প্রধান শিক্ষক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিক্ষক সাজিদুলকে হেফাজতে নেবার পর এ বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে তার দ্বারা নির্যাতিত অনেক শিক্ষার্থী।
ভাটিপাড়া গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন, শিক্ষক সাজিদুল ইসলাম এরআগে শান্তিগঞ্জ উপজেলার ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরিকালে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিতাড়িত হন।
দিরাই উপজেলার হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে সাজানো নির্বাচনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ অনিয়ম দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পত্রিকার শিরোনাম হন তিনি।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক সাজিদুল ইসলামকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী হেফাজতে নিয়েছে।