jagannathpurpotrika-latest news

আজ, , ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ শিরোনাম :



আল্লাহর প্রিয় যারা

মুস্তাফিজ বিন হাবিবুল্লাহ:

একজন প্রকৃত মুমিনের সবচেয়ে বড় চাওয়া হলো আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি ও তাঁর ভালোবাসা। কারণ কারও প্রতি যদি আল্লাহ সন্তুষ্ট হন তাহলে আখেরাতে তার কোনো ভয়-ভীতি থাকবে না।

সে ত্রাসের সম্মুখীন হবে না। বরং সে আখেরাতে হাসিখুশি ও সুখে থাকবে। অনেক মানুষ আছে, যারা আমলের ক্ষেত্রে অগ্রসর। কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট। আবার কেউ কেউ এমন রয়েছেন, যারা বেশি আমল করেন না, তবুও আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট। কাউকে আল্লাহ ভালোবাসেন কিনা ও তাঁর প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট কিনা এ ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে কিছু আলামতের উল্লেখ পাওয়া যায়।

যার মাধ্যমে মুমিন বান্দা নিজেই বুঝতে পারবেন আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট কিনা ও আল্লাহর কাছে তিনি ভালোবাসার পাত্র কিনা। আল্লাহ বলেন, যারা সচ্ছল-অসচ্ছল উভয় অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে এবং ক্রোধ দমন করে ও লোকদের ক্ষমা করে আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)। যারা সব ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। ইরশাদ হয়েছে, আর আপনি যখন কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তখন আল্লাহর ওপর ভরসা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার ওপর নির্ভরকারীদের ভালোবাসেন (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)।

যারা বিপদে ধৈর্যধারণ করেন তাদের আল্লাহ ভালোবাসেন। ইরশাদ হয়েছে ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৬)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহতায়ালা কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরাইল (আ.)কে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাসো। অতঃপর জিবরাইল (আ.)ও তাকে ভালোবাসতে থাকেন এবং আকাশে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহতায়ালা অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন আকাশের অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করেন। অতঃপর সেই বান্দার জন্য জমিনেও স্বীকৃতি স্থাপন করা হয় (মেশকাত : ৫০০৫; মুসলিম ১৫৭-(২৬৩৭৮)।

বিপদে মুসিবতে সন্তুষ্টচিত্তে থাকেন এমন বান্দাকে আল্লাহতায়ালা ভালোবাসেন। ইবরাহিম (আ.)-এর অনেক পরীক্ষা নিয়েছেন মহান আল্লাহ। কুরআনের কোথাও বলা হয়নি, আল্লাহতায়ালা ফেরাউন কিংবা নমরুদের পরীক্ষা নিয়েছেন। বরং তিনি তাঁর ভালোবাসার বান্দাদের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। তাই বহু ইমানদারের জীবনে দেখবেন দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদ লেগেই থাকে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে রাসূল (সা.) বলেন, মুমিনের জন্য দুনিয়া কারাগারসদৃশ ও কাফিরের জন্য জান্নাতসদৃশ (মুসলিম : ২৯৫৬)।

আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, তার মধ্যে পদ-পদবি, অর্থ-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি-এসব দুনিয়াবি কোনো কিছুতে তার আকর্ষণ থাকবে না। কাতাদা ইবনে নুমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তাকে দুনিয়া (প্রাচুর্য) থেকে বাঁচিয়ে রাখেন, যেমন তোমাদের কেউ তার রোগীকে (পানি স্পর্শ করলে যার অসুবিধা হবে, তাকে) পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখে’ (তিরমিজি : ২০৩৬)।

আল্লাহতায়ালার ভালোবাসার বান্দার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামত হলো-তাকে আল্লাহ দ্বীনের বুঝ দান করবেন এবং সে অনুযায়ী বেশি বেশি নেক আমল করার সুযোগ দান করবেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের প্রজ্ঞা দান করেন। আল্লাহই দানকারী আর আমি বণ্টনকারী’ (বুখারি : ৭১; মুসলিম : ১০৩৭; মেশকাত : ২০০)।

এখানে ক্লিক করে শেয়ার করুণ